পরিচিতিঃ মাঝারী জাতীয় নরম মৌসুমী গাছ, একবার ফুল ও ফল হয়ে মরে যায়।
বৈশিষ্ট্যঃ উচ্চতায় ২০-৩০ সেমি (৮-১২ ইঞ্চি), পাতা সরু ও চিকন, সবুজের মধ্যে ছাই- ছাই রং মেশানো। জোড়া ধরে সোজা হয়ে পাতা জন্মায়।
Family-Ranunculaceae
Description-The genus Nigella has about
20 species.The most widely cultivated
species is N. sativa,an erect annual,
highly branched herb growing to 70 cm,
Leaves pinnately dissected,
with fine linear segments.
Flowers are star shaped, usually pale blue.
N. sativa is cultivated as a crop for its
black seeds at higher altitudes
between 1500-2500 m, in Kenya, Sudan,
Afghanistan, central and southern Europe,
India, Iran, Syria, Russia etc.
ফুলঃ স্ত্রী, পুরুষ দুই ধরণের ফুল হয়, নীলচে সাদা (জাত বিশেষে হলুদাভ) রং। পাঁচটি পাঁপড়ি।
ফলঃ গোলাকার ফল, কিনারায় আঁকর্শির মত রাড়তি অংশ থাকে।
বীজঃ কালো রং এর প্রায় তিন-কোনা আকৃতির বীজ।
বীজকোষ খাঁজ আকারে ফলের সাথে লম্বালম্বি ভাবে থাকে।
প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকতে পারে।
ব্যবহারঃ মশলা হিসাবে ব্যাপক ব্যবহার। পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় বহু রকমের ব্যবহার আছে।প্রসাধনীতেও ব্যবহার হয়।
যে অংশটি ব্যবহার করা হয়ঃ শুকনো বীজ ও বীজ থেকে পাওয়া তেল।
পরিবেশঃ প্রচুর রোদ লাগে এমন যে কোন সমতল জমি।
মাটিঃ যে কোন মাটিতেই জন্মায়। বেলে-দোঁআশ মাটিতে ফলন ভাল হয়।
বপন সময়ঃ অগ্রহায়নের শেষ থেকেই লাগানো যায়। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে পৌষের প্রথমে লাগানো ভাল।
জমি তৈরীঃ ভাল করে কুপিয়ে বা লাঙ্গল দিয়ে মাটি মিহি করতে হবে।
নিড়ানি দিয়ে ঘাস ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
অল্প পরিমান, অর্থাৎ ১০ শতাংশ বা তার কম জমিতে চাষ করলে ৫ সেমি/ ২ ইঞ্চি উঁচু বেড তৈরী করা ভাল। ১০ শতাংশ জমিতে ১০ কেজি পচা গোবর ও ২ কেজি পচা খৈল, অথবা ১০ কেজি পরিমাণ যে কোন কম্পোস্ট মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বেড তৈরী করা যেতে পারে।
মিহি মাটি দিয়ে সামান্য উঁচু বেড তৈরী করলে বেশি সার লাগবে না।
খেয়াল রাখতে হবে যাতে কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি (১৫ সেমি) মাটি আলগা থাকে।
অগ্রহায়নের মাঝামাঝি সময়ে মাটিতে‘জো’ আসলে জমি তৈরী করা আরম্ভ করা যেতে পারে।
সার মেশানোর ১ সপ্তাহ পরে প্রয়োজন হলে একবার নিড়ানি দিয়ে বেড তৈরী শেষ করতে হবে।
বপনঃ ১ ফুট বা ৩০ সেমি, দূরে দূরে ১-৪ ইঞ্চি গর্ত করে প্রতি গর্তে ২-৩টি করে বীজ পুঁততে হবে, খেয়াল রাখতে হবে বীজ বেশী গভীরে যেন না যায়।
বীজের পরিমানঃ ১০ শতাংশ জমিতে ৩৫০-৪০০ গ্রাম বীজ।
বীজ শোধনঃ আলাদা করে শোধনের দরকার নেই। তবে বোনার আগে ভাল করে ধূয়ে ধূলাবালি
ও চিটা বীজ সরিয়ে নেওয়া ভাল। ভেজা বীজ বপন করা উচিৎ।
পরিচর্যাঃ বীজ লাগানোর পরই হালকা করে মাটি দিয়ে গর্ত ঢেকে দিতে হবে।
পাখিতে বীজ খেতে না পারে, সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
সেচঃ সেচের প্রয়োজন নেই। তবে নতুন চারা লাগানোর পর রোদ বেশি হলে ছিটিয়ি
েপানি দেওয়া যেতে পারে; সন্ধ্যায় পানি ছিটিয়ে দেওয়া ভাল।
সার প্রয়োগঃ জমি তৈরীর সময় ছাড়া পরে আর সার দেওয়া প্রয়োজন নেই।
পোকা মাকড় ও রোগবালাই ঃ কালোজিরা সহজে পোকা মাকড়ে আক্রান্ত করে না।
বরং এর স্বাভাবিক পোকা মাকড় ধ্বংসের ক্ষমতা আছে। সেরকম রোগ বালাই হয় না।
সময় কালঃ
অংকুরোদগম/ চারা গজানো ঃ ১২-১৬ দিন/ ০-২ সপ্তাহের মধ্যে
গাছের বৃদ্ধিঃ ৩০-৪০ দিন/২-৫ সপ্তাহের মধ্যে
ফুল আসবেঃ ৩৫-৪২ দিন/ ৬-৭ সপ্তাহের মধ্যে
ফল আসবেঃ ৪২- ৫৫ দিন/৭-৮ সপ্তাহের মধ্যে
ফল পাকবেঃ ৬০-৮৫ দিন/ ৯-১২ সপ্তাহের মধ্যে
বীজ বপনের পর সর্বমোট ১২ সপ্তাহের মধ্যে ফসল পাকবে ও তোলার সময় হবে অ
র্থাৎ পৌষের প্রথমে চাষ করলে ফাল্গুন-চৈত্রে ফসল তোলা যাবে।
ফলনঃ ১০ শতাংশ জমিতে উপরোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী চাষ করলে গড়ে ৩০-৩৫ কেজি কালোজিরা পাওয়া যাবে।
ফসল সংগ্রহঃ ফাল্গ্হন-চৈত্রে গাছ মরে গেলে গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে ২
দিন রোদে শুকিয়ে নিয়ে হাতে মাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা যায়।
গাছে সামান্য রস থাকতেই ফল সংগ্রহ করা উচিত, নয়ত বীজ জমিতে ঝরে পড়তে পারে।
সংরক্ষণঃ চটের বস্তায় বা মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
অন্তত: এক বছর পর্যন্ত বীজ সংরক্ষণ করা যায়।
শুকনো, অন্ধকার জায়গায় রাখতে হবে।
(*) “ঔষধি উদ্ভিদ উৎপাদন ও ব্যবহার’’, এম, এ, হাকিম, বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন, ২০০৫; পৃষ্টা- ১৩১ ।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন